A Complete Travel Guide to Kalimpong Hill Station

Kalimpong

কালিম্পং ভারতের বিখ্যাত শৈল শহরগুলির মধ্যে অন্যতম একটি ছোট শৈল শহর। দার্জিলিং -এর ৫০ কিলোমিটার পূর্বে কালিম্পং,
তিস্তা নদীর ধারে নিম্ন হিমালয়ের একটি শৈলশিরার উপর অবস্থিত, গড় উচ্চতা ১,২৫০ মিটার (৪,১০১ ফুট)। পাহাড়, অরণ্য, দূষণমুক্ত প্রকৃতি, সহজ সরল মানুষ, ছোট ছোট ক্ষেত আর মেঘমুক্ত দিনে কাঞ্চনজঙ্ঘার ভেসে ওঠা তুষারাচ্ছাদিত শৃঙ্গ,
মনোরম আবহাওয়া ও সহজগম্যতা একে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র করে তুলেছে।

এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কালিম্পং জেলার কালিম্পং মহকুমার সদর শহর। শহরের উপকণ্ঠে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ২৭ মাউন্টেন ডিভিশন অবস্থিত। একসময় এই শহর দিয়েই ভারত-তিব্বতের মধ্যে বাণিজ্য চলত। কালিম্পং শব্দের মধ্যেই এর ইতিহাস লুকিয়ে আছে। অতীতে এই অঞ্চল ছিল ভুটানে। এই শহরে এক সময় ভূটানের রাজ্যপালের কেন্দ্রীয় দফতর ছিল। তিব্বতি ভাষায় ‘কালিম’ শব্দের অর্থ ‘রাজার মন্ত্রী’ এবং ‘পং’ শব্দের অর্থ ‘শক্ত ঘাঁটি’ থেকেই নামকরণ কালিম্পং। ১৮৬৫ সালে এটি ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। অন্য মতে, লেপচা ভাষায় কালিম্পং শব্দটির অর্থ ‘যে শৈলশিরায় আমরা খেলা করি ‘। অতীতে এখানে স্থানীয় আদিবাসীদের গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়ানুষ্ঠানের আসর বসত। পাহাড়ের অধিবাসীরা এই অঞ্চলকে কালিবং-ও বলে থাকেন।

 

পথের ধারে অজস্র অর্কিড আর ক্যাকটাসের ফুল ,
শৈবালদামের ওপর পা ফেলে সোনালি ওক গাছের ঘন অরণ্যের মধ্য দিয়ে হেঁটে যাওয়া, কালিম্পং-এর অন্যতম আকর্ষণ। দেলো পাহাড়, রবীন্দ্রনাথের গৌরীপুর হাউস, গ্রাহাম সাহেবের গড়া মিশনারী আশ্রম, ক্যাকটাস- অর্কিড ফার্ম, চার্চ, গুম্ফা নিয়ে পূর্ব হিমালয়ের এই শহর প্রকৃতির অজস্র দানে সমৃদ্ধ।

উদ্যান পালনে কালিম্পং বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এখানে নানাপ্রকার অর্কিড দেখা যায়। এখানকার নার্সারিগুলিতে হিমালয়ের ফুল, স্ফীতকন্দ (tubers) ও রাইজোমের ফলন চলে। কালিম্পং-এর অর্থনীতিতে এই ফুলের বাজার বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। নেপালি, অন্যান্য আদিবাসী উপজাতি ও ভারতের নানা অংশ থেকে অভিনিবেশকারীরা শহরের প্রধান বাসিন্দা। কালিম্পং বৌদ্ধধর্মের একটি কেন্দ্র। এখানকার জ্যাং ঢোক পালরি ফোডাং বৌদ্ধমঠে বহু দুষ্প্রাপ্য তিব্বতি বৌদ্ধ পুঁথি রক্ষিত আছে

 

কালিম্পং এর দর্শনীয় স্থানসমূহ

#ডেলো_পাহাড়

ডেলো পাহাড়টি কালিম্পংয়ের সবচেয়ে উঁচু পয়েন্ট। শহর থেকে উত্তর-পূর্বে প্রায় ৭ কিমি দূরে সমুদ্রতল থেকে ১৭০৪ মিটার/৫৫০০ ফুট উচ্চতায় ডেলো ভিউ পয়েন্ট। এখান থেকে কালিম্পং শহরটির শোভা সবচেয়ে ভালো দেখা যায়। এছাড়াও দেখা যায় দূরের বহমান তিস্তা ও তার আশপাশের গ্রাম ও রেলি নদীর উপত্যকার সুদৃশ্য। আবহাওয়া ভালো থাকলে দেখা মেলে কাঞ্চনজঙ্ঘার। পরিষ্কার দিনে, এই পাহাড় থেকে পশ্চিম সিকিমের তুষার-আচ্ছাদিত পাহাড়গুলিও দৃশ্যমান।

কাছেই , পাহাড় থেকে ১ কিমি দূরে কালিম্পং পর্যটনের নতুনতম সংযোজন “Science City” ।ছোটদের খেলার সাথে বিজ্ঞানভিত্তিক শো, সঙ্গে জুরাসিক পার্ক- বিনোদনের একটি ভালই জায়গা। এছাড়াও, এই পাহাড়ের চূড়ায় একটি পার্ক রয়েছে, যা বিনোদনমূলক উদ্দেশ্যে নির্মিত হয়েছে। এখানে নানারকম অর্কিড,ক্যাকটাস ছাড়াও বিদেশী ফুল গাছও অনেক রয়েছে। পার্কটি পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয়দের কাছে একটি জনপ্রিয় পিকনিক স্পট। পার্কের কাছে একটি হিন্দু মন্দিরও আছে। সামগ্রিকভাবে ডেলো কালিম্পং শহর এবং তার পার্শ্ববর্তী পাহাড়গুলির একটি প্যানোরামিক ৩৬০ ডিগ্রি ভিউ সরবরাহ করে।
ডেলো থেকে ফেরার পথে চোখ পড়বে গ্রাহাম সাহেবের স্কুল চত্বর। বহির্বিশ্বের কাছে কালিম্পং এর পরিচিতির ক্ষেত্রে এই গ্রাহাম সাহেবের ভূমিকা অবিসংবাদিত।

 

#গৌরিপুর_হাউস

শহর থেকে চার কি:মি: দক্ষিণ পূর্বদিকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পদচিহ্নকে ধারণ করে আছে বিখ্যাত গৌরিপুর হাউস। স্থানীয়ভাবে ‘চিত্রাভানু’ নামে পরিচিত। মংপু যাওয়া-আসার পথে রবীন্দ্রনাথ প্রায়ই এখানে অবকাশ যাপন করতেন।

#কালিম্পংআর্টসঅ্যান্ডক্রাফ্টসেন্টার

কালিম্পংয়ের কালিম্পং আর্টস অ্যান্ড ক্রাফ্ট সেন্টারে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নানা ঐতিহাসিক সামগ্রী রয়েছে।

#তিস্তা_বাজার

কালিম্পংয়ে এলে প্রায় সব পর্যটকই এই বাজারে আসেন। সস্তায় নানা সামগ্রী পাওয়া যায় এখানে।

#রোমানক্যাথলিকচার্চ

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনকালে এখানে রোমান ক্যাথলিক চার্চ গড়ে ওঠে।

#ম্যাকফারলেনচার্চ

স্কটিশ মিশনারিরা ১৮৯১ সালে এই চার্চটি তৈরি করেন।

#মর্গ্যান_হাউস

ব্রিটিশ আমলে তৈরি কালিম্পংয়ের অন্যতম পুরনো বাংলো এটি। এটিকে হন্টেড হাউসও স্থানীয়রা বলে।

#টসোঙ্গাঁ_গুম্ফা

দার্জিলিং জেলার সবচেয়ে পুরানো ভুটানি আশ্রম এটি যা ভুটানীদের কালিম্পং দখলের সাক্ষ্য বহন করছে। অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের মতে এই আশ্রমটি ১৬০০ সালের দিকে স্থাপিত। সার্জন রেনে এই মঠটিকে ‘টুসো চিম্পা’ নামে অভিহিত করেছেন।

#জাংঢোকপালরি_ফোডাং

কালিম্পংয়ে অনেক বৌদ্ধ মনাস্ট্রি রয়েছে। এর মধ্যে জাং ঢোক পালরি ফোডাং মনাস্ট্রিটি বিখ্যাত।
শহর থেকে তিন কি:মি: দক্ষিণ পূর্ব দিকে ডুরপিন পাহাড়ের চূড়ায় ১৩৭২ মিটার উচ্চতায় এটি অবস্থিত। ডুরপিন মনাষ্ট্রি নামেও এটি পরিচিত। কালিম্পং এর সবচেয়ে বড় এই মনাষ্ট্রিকে ১৯৭৬ সালে বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু দালাইলামার নামে উৎসর্গ করা হয়।

#লেপচা_মিউজিয়াম

ইতিহাস মনস্ক পর্যটকদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্রস্টব্য। লেপচাদের জীবন জগত ও সংস্কৃতির নানা ধরনের লিখিত নিদর্শন ও লেপচা বাদ্যযন্ত্রের সমাহার রয়েছে এখানে। শহর থেকে এক কিমি দূরত্বে অবস্থিত।

#পাইনভিউ_নার্সারী

এটি ক্যাকটাস নার্সারী নামেও পরিচিত। কালিম্পং এর পর্যটক আকর্ষণের অন্যতম জনপ্রিয় কেন্দ্র এটি। শহরতলীতে অবস্থিত এই নার্সারীতে প্রায় পনের’শ ধরনের বিরল প্রজাতির অপূর্ব সব ক্যাকটাসের সঙ্গে পরিচিত হতে পারবেন। ক্যাকটাস সংগ্রহের দিক থেকে এটি এশিয়াতে একটি বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছে।

 

#হনুমান_টক

ডেলো পাহাড়ের কাছে কালিম্পং থেকে ৫ কিমি দূরে পঁচিশ থেকে ত্রিশ ফুট উঁচু ধাতব কাঠামোর লাল রংয়ের হনুমান দেবতার জন্য বিখ্যাত স্থানটি।পাহাড়ের উপর এই মূর্তিটি রয়েছে। অনেকগুলি সিঁড়ি দিয়ে উঠে এখানে আসতে হবে। এখান থেকে যেদিকে তাকাবেন সেদিকেই হিমালয়ের অপরূপ সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে, কাঞ্চনজঙ্ঘা, সিকিম, লাভা, কাফের -এর পর্বতশৃঙ্গগুলি। হনুমান দেবতার স্থাপনার ঠিক সম্মুখে ডান দিকে দেবী দূর্গার একটি ছোট্ট মন্দির রয়েছে।

#লাভা

কুয়াশা ও মেঘে ঢাকা পাইন গাছে ঘেরা এই ছোট্ট গ্রামটি কালিম্পং থেকে ৩৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ভূটানের সঙ্গে বাণিজ্যের পুরনো পথের মধ্যে অবস্থিত গ্রামটি রয়েছে ২৩৫০ মিটার উচ্চতায়। এখানে একটি বৌদ্ধ মন্দির ও প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। প্রকৃতি উপভোগ ও পাখি দেখার জন্য বিখ্যাত লাভা, নেওরাভ্যালি ন্যাশনাল পার্কে ওঠার সূচনাবিন্দুও। শিলিগুড়ি থেকে সেবক ব্রিজ পেরিয়ে ডামডিম-গরুবাথান হয়েও আসা যায় লাভা। থাকার জন্য লাভায় আছে ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের বাংলো সহ নানা বেসরকারি হোটেল। উন্নত ও সুব্যাপ্ত কাঞ্চনজঙ্ঘার রুপোলি মুকুট লাভার অন্যতম শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ। মূল শহর ছাড়িয়ে জঙ্গলের নিরিবিলি পথে ঘুরে বেড়ালেও মন তরতাজা হয়ে উঠবে।

#রিশপ_রিম্বিক

কালিম্পং অঞ্চলের সেরা পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে মানা হয় রিশপ-রিম্বিককে। এটি লাভা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে এবং কালিম্পং থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে ৮২৫০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত একটি লেপচা গ্রাম। লেপচা ভাষায় ‘ রি ‘মানে হলো উঁচু পাহাড় আর ‘শপ ‘ মানে গাছ। রিশপ মানে হলো উঁচু পাহাড়ে গাছের সারি। বার্চ, পাইন, রডোডেনড্রনের জঙ্গলে গিয়ে মনে হবে, নামটা সার্থক। অজস্র বুনো ফুল আর অর্কিডে ভর্তি রিশপ যেন পাখিদেরও স্বর্গরাজ্য।

লাভা থেকে পাহাড়ি পথে ট্রেকিং করে পৌঁছনো যায় এখানে । জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে ঘণ্টাখানেকের ট্রেক। রাস্তা বড্ড এবড়োখেবড়ো, তাই ভাল জুতো নিয়ে যাওয়া দরকার অবশ্যই।

অবশ্য লাভা থেকে রিশপ পর্যন্ত জিপ চলার পথও আছে। রিশপের রাস্তা এখনও কাঁচা। বিদ্যুৎ এখনও না পৌঁছনোয়, এখানে থাকার মধ্যে একটা পুরাতন অনুভূতি আছে । জায়গাটার মজা হল, কাঞ্চনজঙ্ঘা ছাড়াও ভারত আর নেপাল মিলিয়ে আরও প্রায় গোটা দশেক পর্বতচূড়া দেখা যায় এখান থেকে, নাথুলা পাস, জেলেপলা পাস, গ্যাংটক আর তিব্বতের পাহাড় চূড়া গুলি দেখা যায়
টিফিনদাড়া ভিউ পয়েন্ট থেকে পাহাড়ের প্যানোরমা ক্যামেরাবন্দি করার সুযোগ মিস করবেন না। যার নীচের অংশ থেকেই আবার শুরু হয়ে যাচ্ছে পাইনের বন। এই ভিউ পয়েন্ট থেকে প্রায় ৩৬০ ডিগ্রির ভিউ পাওয়া যায়। 2 কিমি হেঁটে উঠতে হয়।
কাঞ্চনজঙ্ঘার কোলে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দেখার অন্যতম সেরা জায়গা রিশপ। যদি প্ল্যান করে পূর্ণিমার সময় যেতে পারেন, আরও ভাল। পাহাড়ি জায়গায় যে কোনও সময়েই আকাশের মুখ ভার হয়ে যেতে পারে। তবে বর্ষার সময়টা বাদ দিয়ে যাওয়াই ভাল। সূর্যাস্তের পর আশপাশের পাহাড়ে জোনাকির মতো আলো জ্বলে ওঠার দৃশ্যও দারুণ!
স্থানীয় শেরপা ও লেপচারা কটেজের মতো বেশ কিছু পর্যটকদের থাকার জায়গা বানিয়েছেন। যেগুলিকে হোমস্টে বলে।
একটা ছোট মনাস্ট্রি আছে রিশপে, যেটা পায়ে হেঁটেই দেখে আসতে পারেন। যাঁরা রিশপে যান, তাঁরা সাধারণত প্যাকেজে লাভা-লোলেগাঁও কিংবা পেডংকে রাখেন। রিশপ থেকে নেওড়া ভ্যালি রিসর্ট বেশি দূর নয়। চাইলে সেখানেও একদিন থেকে যেতে পারেন।
রিশপ যেহেতু ছোট একটা গ্রাম, তাই লাভার উপর অনেকটাই নির্ভরশীল জায়গাটা। বিদ্যুতের অনিয়মিত সরবরাহও এখানকার অন্যতম প্রধান সমস্যা। জলের সঙ্কটেও ভোগেন স্থানীয়েরা। কাজেই পর্যটকদের বার বার করে বলে দেওয়া হয়, এখানে গিয়ে জলের অপচয় না করতে।

#লোলেগাঁও

কালিম্পং-এর একটি ছোট্ট, অপূর্ব সুন্দর ও শান্ত গ্রাম হল লোলেগাঁও। ঘন সবুজ পাইন অরণ্যে ঘেরা লোলেগাঁও থেকে ভোরের কুয়াশায় মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। কালিম্পং ও লাভা থেকে পাইনের জঙ্গলে ঘেরা আঁকাবাঁকা পথ ধরে লোলেগাঁও যেতে এক ঘণ্টা সময় লাগে। বনবাংলোর বারান্দায় বসে অদূরের কালিম্পং শহর দেখা যায় আর সন্ধ্যে নামলে মনে হয় অগুনতি জোনাকি দীপ জ্বালিয়ে রেখেছে পাহাড়চুড়োয়। এখানে বসে বসেই সময় কাটিয়ে দেওয়া যায়। এখানকার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হেরিটেজ ফরেস্টের মধ্যে দড়ি কাঠের ঝুলন্ত সেতু।এই ঝুলন্ত সেতুর উপর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে প্রকৃতির সাথে মিশে যেতে হয়। কান পাতলেই শোনা যায় অরণ্যের নিস্তব্ধতার মাঝে বাতাসের মৃদু সঙ্গীত। এই সেতু চড়তে টিকিট কাটতে হয়।

#ভ্রমণের_সময়

কালিম্পং ভ্রমণের উপযুক্ত সময় মার্চ থেকে জুন এবং সেপ্টেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত। সারাবছরই আসা যায়, শীত এখানে খুব বেশি পড়েনা, আবহাওয়া আরামদায়ক থাকে।
বর্ষাকালে পাহাড়ে landslide বা ভূমি-ধ্বস হওয়ায় না আসাই ভালো। কিন্তু যারা অ্যাডভেঞ্চার আর ভ্রমণ দুটোই ভালোবাসেন তাদের এই সময় এলে , মায়াবী কালিম্পং নিরাশ করবে না।
বর্ষাকালে এর রূপের বাহার যেনো আরো বেড়ে যায়। বৃষ্টিভেজা পাহাড়, মেঘে মেঘে ঢেকে যায়।মেঘ আর পাহাড় তখন এক হয়ে যায়। পাহাড় নব পল্লবে সবুজ সমাহারে সেজে ওঠে। কিন্তু পাহাড়ী রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে ওঠে আর তাছাড়া ভূমি ধ্বস এর ভয় তো আছেই । এসব মাথায় রেখেই ভ্রমণ করা ভাল।
গ্রীষ্মের মৃদুভাবাপন্ন আবহাওয়া ও পাহাড়ের গাছে গাছে নতুন কুড়ির সজ্জা এবং শরৎ ও শীতের রৌদ্রকরোজ্জল আবহাওয়া, স্বচ্ছ নীলাকাশ ও হিমালয়ের তুষারশৃঙ্গের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য স্বততই পর্যটকদের আহ্বান জানায়।

#কিভাবে_যাবেন

শিলিগুড়ি থেকে ৭০ কিমি দূরে কালিম্পক।তেনজিং নোরগে বাস স্ট্যান্ড থেকে প্রতি আধ ঘণ্টা অন্তর বাস ছাড়ছে কালিম্পং – এর। শিলিগুড়ির পানি ট্যাংকি জীপ স্ট্যান্ড থেকে কালিম্পং এর জিপ পাওয়া যায়। সময় লাগে আড়াই থেকে তিন ঘন্টা। দার্জিলিং থেকেও চলেছে শাটেল জিপ/ গাড়ি।

কলকাতা থেকে কালিম্পং এর দূরত্ব ৬৪৬ কি:মি:। কলকাতার শিয়ালদহ থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় দার্জিলিং মেল নিউ জলপাইগুড়ি ষ্টেশনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সময় লাগে ১২ ঘন্টা। নিউ জলপাইগুড়ি থেকে বাস, মিনিবাস অথবা জিপ যোগে কালিম্পং যেতে তিন ঘন্টা সময় লাগবে।

1. Shatabdi Express:
Departure – 14:15
Arrival – 22:30
Operates from Monday to Saturday
Starting Station in Kolkata: Howrah Junction (HWH)
Drop Station in Siliguri: New Jalpaiguri (NJP)
Duration of journey: 8 hours 15 minutes

2. Kanchanjanga Express
Departure – 06:35
Arrival – 18:28
Operates on Monday, Wednesday and Saturday
Starting Station in Kolkata: Sealdah (SDAH)
Drop Station in Siliguri: New Jalpaiguri
Duration of journey: 11 hours 53 minutes

কলকাতার ধর্মতলা, বারাসাত, মধ্যমগ্রাম, উল্টোডাঙ্গা বাস টার্মিনাল থেকেও আপনি বাসে শিলিগুড়ি যেতে পারেন। সময় লাগে 13-14 ঘণ্টা।তারপর শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পক।

কালিম্পক থেকে নিকটবর্তী বিমানবন্দর শিলিগুড়ির নিকট বাগডোগরায় অবস্থিত। বাগডোগরা থেকে কালিম্পং প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। বাগডোগরা থেকে গাড়ি ভাড়া করে কালিম্পং যেতে পারেন।

কালিম্পং থেকে গ্যাংটক যাওয়ার বাস পাওয়া যায়। জিপ চলেছে আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা অন্তর। এছাড়াও লাভা, লোলেগাঁও, রিশপ, পেডং, হৃষিখোলা, নেওড়া ভ্যালি জঙ্গল ভ্রমণের প্রবেশদ্বার এই কালিম্পং।

#কোথায়_থাকবেন

পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন দপ্তরের একাধিক টুরিষ্ট লজ রয়েছে এখানে। বাসস্ট্যান্ডের এক কি:মি: দূরে মেইন রোডে মর্গান টুরিষ্ট লজ, দুই কি:মি: দূরে ডুরপিন দাঁড়ার পথে কালিম্পং টুরিষ্ট লজ, এর পাশে তাশি টুরিষ্ট লজ এবং হিলটপ টুরিষ্ট লজ। সামর্থ্য অনুযায়ী বেসরকারী হোটেলের আবাসনও বেছে নিতে পারেন। অপেক্ষাকৃত ভালো মানের হোটেল হচ্ছে- ডেকি লজ, হোটেল সিলভার ওক্স, হিমালয়ান হোটেল, জেপি লজ, কালিম্পং পার্ক হোটেল, হোটেল মাউন্টেন ভিউ প্রভৃতি।

#কালিম্পং এ কেনাকাটা কি করবেন?

কাঠখোদাই কারুকার্য এই অঞ্চলের একটি ঐতিহ্যগত নৈপুণ্য। কালিম্পং – এ যে সব জনপ্রিয় জিনিস মানুষ কেনাকাটা করে সেগুলি হলো তিব্বতি পশমী-বস্ত্র, গহনা-অলংকার ও নুডলস।
আপনি যদি কোনও স্মারক কিনতে চান, তবে কালিম্পং – এ কেনাকাটা করার সময় ট্যাপেষ্ট্রি ব্যাগ, তাম্রলিপ্ত বস্তু, পার্চমেন্ট ও চিত্রাঙ্কন খুঁজে নিতে পারেন। সতেজ আদা, মধু ও একটি বিশেষ ধরনের শক্ত পনির কালিম্পং-এ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়।

 

Add a Comment

Your email address will not be published.